প্রকাশ :
২৪খবর বিডি: 'দেশে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে সোমবার থেকে রাত ৮টার পর সারাদেশে দোকান, বিপণিবিতান, মার্কেট ও মুদি দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছিল সরকার। তবে এই নির্দেশনার খবর বেশিরভাগ ব্যবসায়ীই জানেন না। সিটি করপোরেশন কিংবা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও কোনো নির্দেশনা বা মাইকিং করা হয়নি। ফলে দোকান বন্ধের বিষয়ে অনেকে পড়েছেন দ্বিধা-দ্বন্দ্বে।'
-কেউ খোলা রেখে বেচাকেনা করেছেন। কেউবা শাটার অর্ধেক খোলা রেখে কৌশলে বিক্রি করেছেন। কেউ সংবাদ মাধ্যম বা ফেসবুকে দেখে নিজে থেকে বন্ধ করেছেন। আবার কেউ কেউ অন্যের দেখাদেখি বন্ধ করেছেন। তবে এ ব্যাপারে প্রশাসনের কোনো তদারকি দেখা যায়নি।
-ফার্মগেটের টেপ পয়েন্টের শোরুমের ইনচার্জ সায়মুন হাসান বলেন, এই সময় শোরুম বন্ধ করলে রাস্তায় যাত্রীর ব্যাপক চাপ বাড়বে। কারণ ব্যবসায়ী-ক্রেতা সবাই একসঙ্গে রাস্তায় বের হবেন। ব্যবসায়ীরা বিপদে পড়বেন। মালিকপক্ষ থেকে এখনও কিছু জানায়নি। তবে সবাই বন্ধ করলে তাঁরাও বন্ধ করে দেবেন বলে জানান তিনি।
'রাত সোয়া ৮টার দিকে ফার্মগেটের ফার্মভিউ মার্কেটের দোকানগুলো বন্ধ করতে দেখা গেছে। এই মার্কেটের ক্রোকারিজ কর্নারের বিক্রয়কর্মী সামাদ বলেন, এই সময়েই বেশি ক্রেতা আসে। কিন্তু ক্ষতি হলেও সরকারের নির্দেশনা মানতে হবে। রাব্বী ক্লথ স্টোরের মালিক মো. রফিক বলেন, রাত ৯টা পর্যন্ত সুযোগ দিলে ভালো হতো। কারণ সন্ধ্যার পর থেকে সাড়ে ৮টা বা ৯টা পর্যন্ত বেশি বেচাকেনা হয়। এই সময় অনেকেই অফিস থেকে বের হয়ে কিছু কেনাকাটা করে থাকেন। ৮টায় বন্ধ করার কারণে ছোট ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।'
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে রাত ৮টার পর বন্ধ সকল দোকান ও মার্কেট
'তেজগাঁও কলেজের পাশে ফুটপাতের কসমেটিকস বিক্রেতা নোমান হোসেন বলেন, দোকান বন্ধের খবর দেখেছি ফেসবুকে। কিন্তু কেউ এখন পর্যন্ত কিছু বলেনি। তাই কেউ বিশ্বাস করেছে, কেউ করেনি। যে যার মতো বেচাকেনা করছে। ৮টায় বন্ধ করলেও যাদের প্রয়োজন তারা দিনেই কেনাকাটা করে ফেলবে। তবে আগেভাগে কেনাকাটায় অভ্যস্ত হতে সময় লাগবে।'
'রাত প্রায় ৯টার দিকে দেখা গেছে, ফার্মগেটে ইন্দিরা রোডে বাটার একটি শোরুমে বেচাকেনা চলছে। শোরুমের ইনচার্জ নাজমুল হোসেন বলেন, দোকান বন্ধের বিষয়ে কোম্পানির পক্ষ থেকে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। তা ছাড়া আশপাশের প্রায় সব ধরনের দোকানই খোলা। বেচাকেনাও চলছে। সে কারণেই তাদের শোরুম খোলা রাখা হয়েছে। তবে ১০টার আগেই বন্ধ করে ফেলবেন বলে জানান তিনি।'
-গ্রিন রোডে গ্লাস ও থাই অ্যালুমিনিয়ামের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থাই অ্যালুমিনিয়াম ফেব্রিকেটরের মালিক আব্দুল আহাদ বলেন, তিনি এ ব্যাপারে কিছুই জানতেন না। সাড়ে ৮টার পর হঠাৎ দেখেন, কেউ কেউ দোকান বন্ধ করে দিচ্ছেন। পরে জানতে পারেন, সরকার রাত ৮টার পর বন্ধ রাখতে বলেছে। কিন্তু বন্ধের ব্যাপারে সিটি করপোরেশন বা প্রশাসন কোনো পক্ষ থেকেই নির্দেশনা বা মাইকিং করা হয়নি। এ কারণে অনেকেই জানে না।
'এত দ্রুত দোকান বন্ধ করলে চোর-ডাকাতের উৎপাত বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ৮টার পর মার্কেট বন্ধ হলে মানুষ আগেভাগে বাসায় চলে যাবে। তখন সড়কগুলো ফাঁকা হয়ে যাবে। এতে চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতি বাড়তে পারে। ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি পথচারীরাও তাতে সমস্যায় পড়তে পারেন।'
-কিছুটা ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে কারওয়ান বাজার ২ নম্বর সুপার মার্কেটে। রাত সোয়া ৯টার দিকে গিয়ে শোনা গেছে, সাড়ে ৮টার পর পুরো মার্কেট বন্ধ করা হয়েছে। দ্রুত বন্ধ করার জন্য সেখানে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে মার্কেটের দোকান মালিক সমিতি। তবে এতে বিপাকে পড়ে ওই মার্কেটের বাইরে থাকা খাবার ও ওষুধের দোকান। সেখানে একটি হোটেলের বিক্রয়কর্মী হাসান বলেন, অনেকেই দোকান বন্ধ করতে গড়িমসি করেছে। এ কারণে মার্কেট কমিটি বিদ্যুৎ বন্ধ করে দিয়েছে। এতে খাবার বেচাকেনায় সমস্যা হচ্ছে।